বুধবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৫

আগুনে দগ্ধ মানুষের আর্তনাদ

এক দেশে এক বাবা ছিল। আর ছিল মা। তাদের ফুটফুটে একটা বাচ্চা ছিলো। একদিন হলো কি ... গরম পানিতে বাচ্চাটার হাত পুড়ে গেলো। বাবা মা তো কাঁদতে কাঁদতে শেষ। বাচ্চাটাও ব্যথায়, যন্ত্রণায় চিৎকার করে কাঁদছিলো।
এখন বাচ্চাটার চিকিৎসা করাতে হবে। যেতে হবে ঢাকা। একমাত্র ওখানেই পোড়া রোগীদের সবচেয়ে ভাল চিকিৎসা হয়।
বাবা মা বাচ্চাটাকে নিয়ে অনেক কষ্ট করে ঢাকায় আসলো। ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসা নিলো। ডাক্তার হাসিমুখে বলল, এবার বাবু সোনাটা ভালো হয়ে যাবে। কোনো চিন্তা নেই। বাবা মা'র মুখে হাসি ফুটলো।
চিকিৎসা শেষে তারা বাসে করে বাসায় ফিরছিলো। বাচ্চাটা হাসছে। হাসতে হাসতে বলছে, বাবা, তকলেট খাবো।
তকলেট মানে হচ্ছে চকলেট। ছোট বাবু তো... ঠিক মতো কথা বলতে পারে না।
বাবা হাসতে হাসতে বলল, ঠিক আছে সোনা। বাস থেকে নেমেই চকলেট কিনে দেবো।
বাচ্চাটা আবার বলল, তত্যি?
তত্যি মানে হচ্ছে সত্যি। ছোট বাচ্চা তো, ঠিক মতো কথা বলতে পারে না।
বাবা আবারও হাসতে হাসতে বলল, সত্যি, সত্যি, সত্যি।
সেই সময় হলো কি ... হঠাৎ বাসে পেট্রল বোমা মারা হলো। দাউ দাউ করে জ্বলে উঠলো আগুন। সেই পোড়া বাচ্চাটা আবার আগুনে পুড়ে গেলো। বাবা সেই আগুন নেভাতে গিয়ে তার নিজের হাতই পুড়িয়ে ফেললো।
বাচ্চাটার নাম সাফির। গত সোমবারের ঘটনা।
নরকে পাপীরা জ্বলে পুড়ে মরে। তবে বাংলাদেশ এমন এক নরক, যেখানে পাপীরা পোড়ে না, তারা পোড়ায়, নিষ্পাপ শিশুদের পোড়ায়। হাসতে হাসতে পোড়ায়।


ফেসবুকে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন